পাঠকামি-৭
ফেসবুকে অনেক কবিতার ভীড়ে কবিদের স্রোত ,
গা এলিয়ে দিয়ে দেখি ভেসে চলেছে
কলার ভেলা, খড়কুটো, দু চারজনের সাথে বাঁকের মোড়ে দেখা হয়, জল ওলোট পালোট, কিছু কবির সাথে ঘুলিয়ে যায় জল, কারো সাথে মিলে যায় স্রোত । কোন পাঠক প্রিয় হয়ে ওঠেন,
কোন কবি বন্ধু হয়ে ওঠেন,
দেবাশিস দার সাথে আমার এরকমই
পরিচয় । কলকাতা বইমেলায় অনেক কবিদের মাঝে, উনি আমাকে বন্ধু তার
একটি বইও আমাকে উপহার দেন ।
বইঃ ভেনাস বিউটি পার্লার - দেবাশিস মুখোপাধ্যায়
বইটি আমি অনেকদিন ঘরে সাজিয়ে রেখেছিলাম,
আর তাতে তার সৌন্দর্য্য হারাচ্ছিলো
কারন তা পড়ার জন্য আমি সময় বের করে উঠতে পারছিলাম না । বইএর সৌন্দ্যর্য টেক্সটে ! পড়াই প্রেম । আজ এমন ঘন ঘন বরিষন দিনে, হাতেতুলে
নিলাম ।
"প্রেম নেই" কবিতাটা দিয়ে আমি শুরু করি
অন্ধকার বিছানাও বোঝে প্রেম নেই
শরীরের কাছে যেতে হয় বলেই শরীর"
দেবশিস দার কাব্যপ্রতিভার এক অনন্য উদাহরন একটা
কবিতা দিয়ে বোঝানো যাবে না, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা
তার কবিতার ভিতকে মজবুত করে তোলে ।
"তিনটি লোক"
তিনটি লোকের সঙ্গে ঘর !
একটি লোক যখন পদ্মপাতায়
অন্যজন দুরন্ত ট্রেনের জানালায়
তৃতীয়জন বিছানায় মিকিমাউস খেলে ।
আমি মাটি স্পর্শ করে দেবাশিসদা কে ছুঁয়ে দেখি,
কতটা কাছ থেকে সে জীবন দিয়ে
কবিতা লেখে । জীবন থেকে কবিতা কখনোই আলাদা নয় । কবিতাকে কতটা সে সংসারের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে ।
আরো অনেক কবিতার নাম করা যায়, বে নাম, বদনাম, ভালোবাসার কবিতা , অ্যান্টিবায়োটিক,
গর্ত, আঙ্গুল, লাশ, বাবা, লড়াই ।
আর একটি কবিতায় দেখি
"মাছঘুম"
ছিপলোক বসে আছে অন্ধপুকুর ঘিরে
...
মুছে ফেলছে দরাদরি রকমারি সমীকরণ
টুসকি দিয়ে মাছঘুম ভাঙ্গানোর দরকার ছিলো ।
অনন্ত প্রত্যাশার এক চুড়ান্ত ফলাফল আছে,
কিন্তু কবির প্রতীক্ষা রয়েছে
কিভাবে একটা ঘটনার পর্দা খুলে দৃশ্যটি ঘটিত হয় তার দিকে, সেই দিকে তাকিয়ে মাছদের কবিতা তুলে নিয়ে আসেন ছিপধারী
দেবাশিস দা, মাছঘুম ভাঙ্গিয়ে জানতে
চায় কত ধানে কতটা চাল হয়ে উঠে আসে ।
কবিতা গুলো ছোটো আকারের, কিন্তু তাতে কবি শক্তি খাটো হয়ে যায় না,
টুকরো অনুভুতির মধ্যে বিরাট
সম্ভাবনার কথা বলে দেবাশিস দার কবিতা । বইটি বেশ ভালো, প্রচ্ছদ ও ভালো হয়েছে । ভবিষ্যতে আরো ভালো কবিতার
বই বেরুবে এই আশা রাখি ।
গ্রেট জব, দেবাশিস দা ।
No comments:
Post a Comment